বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, কোনো ব্যাংকের মূলধন যদি ১০ শতাংশের নিচে নেমে যায় এবং যদি প্রতিষ্ঠানটি প্রভিশন লসে চলে যায়, তাহলে সেই ব্যাংক ডিভিডেন্ড বা বোনাস দিতে পারবে না। এমনকি ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তাকেও বোনাস দেওয়া যাবে না।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে সেন্টার ফর নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশি (সিএনআরবি) আয়োজিত ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ: আসন্ন নির্বাচন, প্রবাসীদের অংশগ্রহণ ও আগামীর অর্থনীতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে গভর্নর এসব কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনীতি সাম্প্রতিক সময়ে নানা সংকটের মধ্য দিয়ে গেলেও আমরা ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার দিকে এগোচ্ছি। বিগত কয়েক বছরে বৈদেশিক লেনদেন ব্যবস্থায় যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে এবং এতে আংশিক সফলতাও এসেছে।”
তিনি জানান, চলতি অর্থবছরে ব্যালান্স অব পেমেন্টে উদ্বৃত্ত দেখা দিয়েছে। এর পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে রেমিট্যান্স প্রবাহ, যা গত বছরের তুলনায় ২১ শতাংশ বেড়েছে। সেই সঙ্গে রপ্তানিও বেড়েছে, যদিও বৈশ্বিক বাজারে নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
হুন্ডি ও অর্থপাচার কমে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, “আগে প্রবাসী আয়ের প্রায় ৩০ শতাংশ লিকেজ হতো, এখন তা অনেকটা কমে এসেছে। উপরের মহল থেকে কমিশন বাণিজ্য কমায় এবং সুশাসনের কারণে এ পরিবর্তন এসেছে। ফলে আমদানি খরচও কিছুটা কমেছে এবং রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।”
ব্যাংক খাত নিয়ে গভর্নর বলেন, “ব্যাংকের মূলধন ১০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে ও প্রভিশন লসে গেলে তারা ডিভিডেন্ড ও বোনাস দিতে পারবে না। প্রভিশন ঘাটতি থাকলে কর্মকর্তারাও কোনো ধরনের বোনাস পাবেন না। তিন মাস ঋণ অনাদায়ী থাকলে সেটি নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) হিসেবে বিবেচিত হবে।”
তিনি আরও জানান, আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে সরকারের সঙ্গে পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করার বিষয়ে আলোচনা শুরু হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, একীভূতকরণ প্রক্রিয়া সফল হলে এক-দুই বছরের মধ্যে ব্যাংক খাত আরও ভালো অবস্থানে আসবে এবং তা কর্মকর্তা ও আমানতকারীদের জন্যও ইতিবাচক হবে।