ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (ছাত্রদল) সমর্থিত সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খানকে ঘিরে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রসঙ্গে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেছেন, “আবিদুল ইসলাম মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হয়েছেন।” মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
রাকিব বলেন, “আবিদকে নিয়ে যে অভিযোগটি করা হয়েছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। নির্বাচনী আচরণবিধিতে স্পষ্টভাবে বলা আছে, রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি থাকলে কোনো প্রার্থী ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেন। আবিদ সেই নিয়ম মেনেই প্রবেশ করেছেন। এরপরও বিষয়টি নিয়ে কিছু গণমাধ্যম একতরফাভাবে সংবাদ পরিবেশন করছে, যা ছাত্রদলের প্রার্থীদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে আমরা সকাল থেকেই কেন্দ্রে উপস্থিত আছি। আমি নিজেও সকাল ৭টা থেকে কার্জন হল ও আশপাশের কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছি। কিন্তু আমরা দেখেছি, পোলিং এজেন্ট নিয়েও নানা ধরনের অব্যবস্থাপনা ও বৈষম্যের শিকার হয়েছি। পাঁচ-সাত দিন আগে আমাদের প্রার্থীদের কাছ থেকে পোলিং এজেন্টের তালিকা চেয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রার্থীরাও যথাসময়ে তালিকা জমা দিয়েছে। কিন্তু প্রশাসন অনেক কেন্দ্রে এমনভাবে এজেন্ট নিয়োগ করেছে যে, ২০-৩০টি বুথে একজন মাত্র পোলিং এজেন্ট। এতে করে আমরা পর্যাপ্তভাবে ভোটের পর্যবেক্ষণ করতে পারিনি।”
এছাড়াও, তিনি উল্লেখ করেন যে, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোট প্রদান নিয়েও সংশয় ছিল, তবে অনেকেই ভোট দিতে এসেছেন। “ভোটারদের অংশগ্রহণ বেড়েছে দুপুরের পর থেকে, বিশেষ করে অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা আসতে শুরু করেছে,” বলেন রাকিব। যদিও তিনি ভোটারদের উপস্থিতির নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান তখন জানাতে পারেননি, তবে জানান, “আমাদের অভ্যন্তরীণ জরিপ অনুযায়ী ছাত্রদল প্যানেল খুবই ভালো অবস্থানে রয়েছে, এবং আমরা জয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।”
ছাত্রদল সভাপতি আরও বলেন, “সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আমরা সবাই চাই। তবে যদি একটি নির্দিষ্ট প্যানেলকে উদ্দেশ্য করে মিথ্যা অভিযোগ ও প্রচারণা চালানো হয়, তাহলে সেটি নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করে।”
ডাকসু নির্বাচনে এবারের ভোট গ্রহণ চলছে ঢাবির ৮টি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে। মোট ভোটার ৩৯,৭৭৫ জন, যার মধ্যে নারী ১৮,৯০২ জন ও পুরুষ ২০,৮৭৩ জন। কেন্দ্রগুলোতে সকাল থেকেই দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীরা ভোট দেন, এবং সার্বিকভাবে ভোটগ্রহণ উৎসবমুখর পরিবেশে হচ্ছে বলে জানা গেছে।
তবে প্রার্থীদের অভিযোগ, প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ, এজেন্ট নিয়ে অসংগতি, এবং কিছু মিডিয়ার পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকা এই নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। ছাত্রদল প্যানেলের পক্ষে থাকা রাকিবুল ইসলাম রাকিব স্পষ্টভাবে এইসব ‘ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণার’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান এবং শিক্ষার্থীদের ভোটের মাধ্যমে এর জবাব দেওয়ার আহ্বান জানান।