বিক্ষোভে উত্তাল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়া। এমপিদের বিপুল ভাতা প্রদানের জেরে ক্ষুব্ধ দেশটির সাধারণ মানুষ। বেতনের বাইরে বাড়ি ভাড়ার জন্য পার্লামেন্ট সদস্যরা পাচ্ছেন বাড়তি ৩ হাজার ডলারের বেশি। যেখানে, ইন্দোনেশিয়ার গড় আয় মাত্র ১৮৮ ডলার। তার ওপর, রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে রয়েছে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ।
ইন্দোনেশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের সদস্য ৫৮০ জন। তাদের প্রত্যেকেই বেতনের বাইরে বাড়ি ভাড়া বাবদ বাড়তি ভাতা হিসেবে পান ৫ কোটি ইন্দোনেশিয়ান রুপি, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় তিন লাখ ৭০ হাজার টাকা। বর্তমান সরকার গত বছরের সেপ্টেম্বরে চালু করে বিতর্কিত এই ভাতা।
সম্প্রতি স্থানীয় গণমাধ্যমে পার্লামেন্ট সদস্যদের বেতন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে ক্ষোভ ছড়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে।
মূলত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ অর্থনীতির দেশ হলেও ইন্দোনেশিয়ার গড় আয় মাত্র ১৮৮ ডলার। রাজধানী জাকার্তায় সর্বনিম্ন বেতন ৩৩০ ডলার হলেও, প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে এর অর্ধেক। সে হিসেবে জাকার্তার সর্বনিম্ন বেতনের প্রায় ১০ গুণ বাড়ি ভাড়া ভাতা পান দেশটির এমপিরা।
দেশটির রাজনীতিবিদ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে রয়েছে লাগামহীন দুর্নীতির অভিযোগ। তার ওপর এই বিপুল ভাতা জন্ম দিয়েছে ক্ষোভের। মূল্যস্ফীতি ও অতিরিক্ত ট্যাক্সের চাপেও দিশেহারা ইন্দোনেশিয়ার সাধারণ মানুষ। আর তাই বিভিন্ন সংগঠনের ডাকে সাড়া দিয়ে বিক্ষোভে নেমেছে ছাত্র-জনতা।
এক বিক্ষোভকারী বলেন, আমি সরকারের সব ট্যাক্স পরিশোধ করি। কিন্তু আমি জানিনা আমার ট্যাক্সের অর্থ কার কাছে যাচ্ছে? হাউস অব রিপ্রেজেন্টিটিভসে যত প্রতিনিধি রয়েছে তারা কেউই জনগণের কথা শোনেন না। যা আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগজনক।
উল্লেখ্য, অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত ইন্দোনেশিয়ায় পাঁচ বছরের মধ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক বছর আগে ক্ষমতায় এসেছিলেন প্রাবোও সুবিয়ান্তো। বছর ঘুরলেও প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ায় জনগণের তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে প্রেসিডেন্টকে। চলমান এই বিক্ষোভ প্রাবোও ক্ষমতায় আসার পর দেশটিতে সবচেয়ে বড় আন্দোলন।