চীন সম্প্রতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের ৮০ বছর পূর্তিতে বেইজিংয়ে বিশাল এক সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করেছে, যেখানে দেশটির সামরিক শক্তি প্রদর্শন করা হয়। তিয়ানআনমেন স্কয়ারে অনুষ্ঠিত এই কুচকাওয়াজে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা উপস্থিত ছিলেন এবং সেখানে স্টেলথ ফাইটার, ট্যাংক, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সহ বিভিন্ন আধুনিক অস্ত্র প্রদর্শিত হয়।
বুধবার সকালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তিয়ানআনমেন স্কয়ারে উপস্থিত হয়ে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রদর্শনীতে থাকা অস্ত্রগুলো ছিল অত্যাধুনিক এবং চীনের সামরিক বাহিনীতে নতুনভাবে যোগ করা সরঞ্জাম। প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো এবং মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
এ সময় শি জিনপিং পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ), নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর ১০ হাজার সদস্যের সামনে ভাষণ দেন এবং চীন শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে অগ্রসর হওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি জাপানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে চীনের জয় এবং বিশ্বে ফ্যাসিবাদবিরোধী যুদ্ধে চীনের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। তিনি শান্তি ও সংঘাত, সংলাপ ও যুদ্ধ, এবং পারস্পরিক লাভজনক ফলাফল নিয়ে মানবজাতির সামনে আসা সংকটের কথা তুলে ধরেন।
এ সময় প্রদর্শিত হয়েছিল নতুন প্রজন্মের হাইপারসনিক মিসাইল, ব্যালিস্টিক মিসাইল, পানিতে চলাচলে সক্ষম ড্রোন, যুদ্ধবিমান, প্রাথমিক সতর্কতা বিমান এবং বিমান জ্যামিং সিস্টেম, এমনকি দূরপাল্লার আন্তঃমহাদেশীয় মিসাইলও। প্রায় ৫০ হাজার দর্শক এই প্রদর্শনী দেখতে উপস্থিত ছিলেন।
সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রাজনীতি বিশ্লেষক ইয়ান চং মনে করেন, শি জিনপিংয়ের এই প্রদর্শনীতে একটি উদ্দেশ্য রয়েছে, যা হলো চীনকে একটি বৃহৎ শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করা। তিনি বলেন, "এই প্রদর্শনী দেখে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর নেতারা বুঝতে পারবেন, চীন কোনোভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকাণ্ডে ভীত নয়।"
এছাড়া, প্রদর্শনীর সময় চীনা বিমানবাহিনী আকাশে কসরত প্রদর্শন করে এবং ব্যানারে লেখা ছিল, ‘ন্যায়বিচার জয়ী হবে’, ‘শান্তি জয়ী হবে’ এবং ‘জনগণ জয়ী হবে’।