ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাত্জ জানিয়েছেন, দেশটির সেনাবাহিনী গাজা সিটির ওপর ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে, যার ফলে অন্তত ৩০টি বহুতল ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। এসব ভবনের অধিকাংশই আবাসিক ছিল এবং সেখানকার সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছিলেন। হামলার ফলে বহু পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে, অনেকে হতাহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে হামলায় নির্দিষ্ট কতজন নিহত বা আহত হয়েছেন—তা এখনও নিশ্চিত করে জানা যায়নি।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাত্জ এক বিবৃতিতে আরও বলেন, এই হামলা ভবিষ্যতের বড় ধ্বংসযজ্ঞের কেবল শুরু মাত্র। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, “যদি হামাস এখনই অস্ত্র ফেলে না দেয় এবং গাজায় আটক রাখা সকল ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি না দেয়, তাহলে হামাসের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত অভিযান চালানো হবে। আমরা তাদের শেষ চিহ্নটুকুও নিশ্চিহ্ন করে দেব এবং গাজা পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে।”
এই হামলার আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা সিটির সকল বাসিন্দাকে সতর্কবার্তা দিয়ে জানায়, তারা যেন অবিলম্বে এলাকা ছেড়ে চলে যায়। ইসরায়েলি পক্ষ দাবি করছে, গাজার বিভিন্ন আবাসিক ভবন ও স্থাপনায় হামাস যোদ্ধারা অবস্থান নিয়ে সেখান থেকে হামলা চালাচ্ছে, ফলে তারা এসব ভবন লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালাচ্ছে। যদিও স্বাধীন মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই ধরনের নির্বিচার হামলা যুদ্ধাপরাধের শামিল, কারণ এতে সাধারণ মানুষ ও শিশুদের জীবন হুমকির মুখে পড়ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, অব্যাহত এই হামলার ফলে গাজায় বিদ্যুৎ, পানি ও চিকিৎসাসেবাসহ জরুরি অবকাঠামো প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে অনেকেই বলছেন, গাজা এখন ‘বাসযোগ্য শহর’ নয়, বরং ধ্বংসযজ্ঞ ও শোকের উপত্যকায় পরিণত হয়েছে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরায়েলকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানালেও, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দিয়েছে—হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূল না করা পর্যন্ত তারা অভিযান চালিয়ে যাবে। অন্যদিকে হামাসও প্রতিরোধ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে গাজায় সহিংসতা ও মানবিক বিপর্যয় আরও গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সূত্র: আল জাজিরা