নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি এই পদত্যাগপত্র জমা দেন। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আগে থেকেই তার পদত্যাগের গুঞ্জন চলছিল। অবশেষে সেটিই সত্যি হলো। সম্প্রতি তরুণদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলায় ব্যাপক হতাহতের ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়। এই অবস্থায় দেশজুড়ে উত্তেজনা বেড়ে যায়।
নেপালের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভকারীরা মন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতাদের বাড়িতে হামলা চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে। আন্দোলনের অন্যতম কারণ ছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা এবং সরকারের দুর্নীতি। বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগ উঠে। কারফিউ উপেক্ষা করে তরুণরা রাস্তায় নেমে আসে এবং বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে।
অভ্যুত্থানমুখী পরিস্থিতির মুখে প্রধানমন্ত্রী অলি চিকিৎসার অজুহাতে দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, তিনি দুবাই যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন এবং এর জন্য একটি বেসরকারি বিমান সংস্থাকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়। পদত্যাগের পর তিনি উপ-প্রধানমন্ত্রীকে ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়ে গেছেন।
এই ঘটনাগুলো ‘জেন-জি আন্দোলন’ নামে পরিচিত তরুণদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছে। তারা সরকারের দমনমূলক নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠে এবং ব্যাপক জনসমর্থন লাভ করে। আন্দোলনের কারণে নেপালে অন্তত ১৯ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হন বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে।
সামাজিকমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরও বিক্ষোভ থামেনি, বরং আরও তীব্র হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সরকার শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেন। দেশটির প্রশাসন এখন স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।