সম্প্রতি প্রকাশিত ‘ক্রাইম এডিশন’ ভিডিও প্রতিবেদনে আলোচিত মুনিয়া হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির সরাসরি জড়িত থাকার বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছে। আফ্রিদির প্রতারণা, ব্ল্যাকমেল, নির্যাতন এবং নারীদের ব্যবহার নিয়ে একাধিক ভুক্তভোগী মুখ খুললে মুনিয়ার মৃত্যুকে ঘিরে নতুন সন্দেহ তৈরি হয়। প্রতিবেদনে উঠে আসে, আফ্রিদির সঙ্গে মুনিয়ার সম্পর্ক কেবল ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ ছিল না; বরং তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে একপর্যায়ে, যা পরিণত হয় সহিংসতায়। এক ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেন, মুনিয়ার ক্ষেত্রেও আফ্রিদি একই পন্থা অবলম্বন করেছে এবং তাকে হত্যার হুমকির মতো মন্তব্য করেছে। নারীর ভাষ্য অনুযায়ী, “মুনিয়ার যেরকম অবস্থা হয়েছে, আমারও ঠিক সেরকম হবে”—এই কথার মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে ভয়ানক বার্তা।
প্রতিবেদনে মুনিয়া ও আফ্রিদির একাধিক ফোনালাপ ফাঁস করা হয়, যেগুলো থেকে তাদের ঘনিষ্ঠতা এবং আফ্রিদির নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণ স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়। এসব ফোনালাপে দেখা যায়, তারা নিয়মিত দেখা করতেন, রাতের বেলায় পরিকল্পিতভাবে একে অপরের সঙ্গে সময় কাটাতেন এবং সম্পর্কের টানাপড়েন চলছিল। এছাড়া মুনিয়ার মৃত্যুর আগমুহূর্তেও তাদের কথাবার্তায় ছিল উত্তেজনা ও চাপের ছাপ। এমনকি, কিছু ফোনালাপে মুনিয়া আফ্রিদির বক্তব্যকে অস্বাভাবিক এবং হুমকিমূলক বলে উল্লেখ করেছেন। প্রতিবেদনে একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়, আফ্রিদি শুধু ব্যক্তিগত সম্পর্কেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না, বরং ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের ছায়ায় থেকে নারীদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন, তাদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন এবং পরে তাদের হুমকি দিয়ে চুপ করিয়ে রেখেছেন।
তৌহিদ আফ্রিদির বিরুদ্ধে এরই মধ্যে দুটি মামলা হয়েছে—একটি যাত্রাবাড়ী থানায়, অন্যটি বাড্ডায়। অভিযোগ রয়েছে, জুলাই আন্দোলনের সময় তিনি একজন বিক্ষোভকারীকে হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সরাসরি জড়িত ছিলেন। অন্য মামলায় বলা হয়েছে, তিনি অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছেন। রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং ডিসি ডিবি হারুন—এই তিনজনের সঙ্গে আফ্রিদির ও তার পরিবারের গভীর সম্পর্ক ছিল। তাদের সুরক্ষা ও সহযোগিতায় তিনি দীর্ঘদিন ধরে দম্ভের সঙ্গে নিজের কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন। তাদের ছত্রছায়াতেই মুনিয়া হত্যার মতো একটি বড় ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসব তথ্য প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে।