প্রতি বছর বিশ্বে ধূমপানজনিত কারণে প্রায় ৮০ লাখ এবং বাংলাদেশে এক লাখেরও বেশি মানুষ মারা যান। ধূমপান কেবল ফুসফুস নয়, ধীরে ধীরে শরীরের প্রায় সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেই ক্ষতি করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু সহজলভ্য খাবার ধূমপান ছাড়তে সহায়ক হতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হলো কলা। কলায় থাকা ট্রিপটোফ্যান মস্তিষ্কে সেরোটোনিন উৎপাদনে সহায়তা করে, যা ধূমপান ছাড়ার সময় তৈরি হওয়া মানসিক অস্থিরতা, বিষণ্ণতা ও ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে।
এছাড়া কলায় রয়েছে ভিটামিন বি৬, সি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফাইবার—যা শরীরকে চাঙা রাখে, হজমে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ধূমপান ছাড়ার পর যেসব উপসর্গ দেখা দেয় (যেমন মাথা ঘোরা, খিদে না পাওয়া, বদহজম), সেগুলো প্রশমনে কলা কার্যকর।
২০০৭ সালে Addictive Behaviors জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, যারা ধূমপান ছাড়ার সময় ফলমূল খান, তাদের সিগারেটের প্রতি আসক্তি দ্রুত কমে। ফল চিবানোর অভ্যাস মুখের ব্যস্ততা ধরে রাখে, ফলে সিগারেট হাতে নেওয়ার প্রবণতাও কমে যায়।
হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, যারা দিনে অন্তত ২ বার ফল খান, তাদের ধূমপান শুরু করার সম্ভাবনা প্রায় ২৫% কম।
অর্থনৈতিক দিক থেকেও কলা সাশ্রয়ী। একজন ধূমপায়ী যদি দিনে ৫–৭টি সিগারেট খান, তাহলে তার মাসিক খরচ প্রায় ৩ হাজার টাকা। কিন্তু একটি কলার দাম মাত্র ৮–১০ টাকা। অর্থাৎ, সিগারেটের পরিবর্তে কলা খেলে স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে, খরচও কমবে।
সবদিক বিবেচনায় ধূমপান নয়—কলা খাওয়াই হতে পারে স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী বিকল্প।