আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের গ্রেপ্তার, মানসিক নির্যাতন এবং জোরপূর্বক টেলিভিশনে বক্তব্য দেওয়ানোর ঘটনায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছেন রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ ক্যামেরা ট্রায়ালে জবানবন্দি দেন মামুন। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনালে তিনি জানান, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাতের কোর কমিটির বৈঠকে আন্দোলন দমনসহ নানা সিদ্ধান্ত হতো।
সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকতেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ স্বরাষ্ট্র সচিব, ডিবিপ্রধান, র্যাব, বিজিবি, আনসার, এনএসআই ও ডিজিএফআইয়ের প্রধানরা। ডিজিএফআই আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের গ্রেপ্তারের প্রস্তাব দেয়, যেটি মামুন নিজে বিরোধিতা করলেও, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মামুনের ভাষ্য, এরপর সমন্বয়কারীদের ধরে এনে তাদের ওপর মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। তাদের পরিবারের সদস্যদের সামনে এনে চাপ প্রয়োগ করে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে বাধ্য করা হয়।
তিনি আরও বলেন, "হারুন অর রশীদ ছিলেন এই কাজে প্রধান ভূমিকার ব্যক্তি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে ‘জ্বিন’ ডাকতেন, কারণ তিনি সরকারের আদেশ বাস্তবায়নে পারদর্শী ছিলেন।"
এ মামলায় মামুন নিজেই একসময় আসামি ছিলেন। পরে তিনি স্বপ্রণোদিত হয়ে রাজসাক্ষী হতে চেয়ে জানান, জুলাই-আগস্টের 'গণহত্যার' সব রহস্য উন্মোচন করবেন।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে গণহত্যার নির্দেশ দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারান বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার আসামির তালিকায় রয়েছেন শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং মামুন নিজেই।