পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, যিনি বর্তমানে আসামি থেকে রাজসাক্ষী হয়েছেন, বলেছেন—২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর দমনপীড়নের ঘটনায় তিনি গভীরভাবে অনুতপ্ত ও লজ্জিত।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমার দায়িত্বকালেই এই রক্তাক্ত ঘটনা ঘটেছে। আমি এর দায় স্বীকার করছি এবং নিহত ও আহতদের পরিবারের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি।”
তিনি আরও বলেন, “এত বড় একটি গণহত্যা ঘটেছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমি দায় নিচ্ছি।”
সেদিন সকালে তাকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। দুপুরে বিরতির আগে ও পরে দুই দফায় তিনি জবানবন্দি দেন। এটি ছিল তার নিজ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের ১১তম দিন এবং তিনি স্বপ্রণোদিতভাবে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন।
ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করে। অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, মামলাটি ক্যামেরা ট্রায়াল হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে এবং এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
এই পর্যন্ত মোট ৩৫ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা তাদের বক্তব্যে সেই সময়কার হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা দিয়ে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১০ জুলাই চৌধুরী মামুন নিজেই ট্রাইব্যুনালে দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার আগ্রহ জানান। এরপর ৩ আগস্ট থেকে মামলাটির আনুষ্ঠানিক সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।