জুলাই আন্দোলনের সময় গুলশানে সংঘটিত পারভেজ বেপারী হত্যা মামলায় নাট্যজগতের পরিচিত মুখ অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমানকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ আদেশ দেন। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার এসআই সামিউল ইসলাম ২৪ আগস্ট ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানির জন্য দিন ধার্য থাকায় সিদ্দিককে আদালতে হাজির করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন, যিনি রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। অপরদিকে, আসামিপক্ষে আইনজীবী এসএম শরীফুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন জানান। তিনি বলেন, “সিদ্দিক একজন নাট্যকর্মী ও জনপ্রিয় অভিনেতা। দীর্ঘদিন সংস্কৃতি অঙ্গনে সক্রিয় রয়েছেন। কোনো রাজনৈতিক দলের পদ-পদবি নেই। তিনি নির্দলীয়ভাবে নমিনেশন চেয়েছিলেন মাত্র। তার বিরুদ্ধে দুইটি মামলা রয়েছে, যার একটিতে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন।”
শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এসআই মোক্তার হোসেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত সিদ্দিক অত্যন্ত সুকৌশলে গুলশানের সুবাস্তু নগরভ্যালির সামনে অবস্থান নিয়ে অর্থের জোগান দেন এবং আন্দোলনকারীদের সহিংসতায় উসকানির ভূমিকা রাখেন। তিনি এজাহারভুক্ত ২২৩ নম্বর আসামি। তদন্তের স্বার্থে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ, পলাতক আসামিদের ধরতে অভিযান, অস্ত্র উদ্ধার এবং ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীদের তথ্য পেতে রিমান্ড প্রয়োজন।
গত ১৯ জুলাই, গুলশান থানাধীন সুবাস্তু নগরভ্যালির সামনে বন্ধুদের সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নিচ্ছিলেন ফার্নিচারকর্মী পারভেজ বেপারী। জুমার নামাজের পর সংঘটিত সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পারভেজের বাবা মো. সবুজ ২ জুলাই গুলশান থানায় মামলা করেন।
সিদ্দিককে গত ২৯ এপ্রিল, বেইলি রোড এলাকায় কিছু যুবক ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে তাকে রমনা থানা হয়ে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরদিন ৩০ এপ্রিল, গুলশানে ভ্যানচালক জব্বার আলী হাওলাদার হত্যাচেষ্টা মামলায় তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ৭ মে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর ২০ আগস্ট, নতুন করে পারভেজ হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।