আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য ১০১ কোটি টাকার ৬০টি বিলাসবহুল গাড়ি কেনার অনুমোদন দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। প্রতিটি গাড়ি মিতসুবিশি পাজেরো (কিউএক্স-২৪২৭ সিসি) মডেলের, যার দাম প্রায় ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনুভা জাবিন এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘অর্থ উপদেষ্টা কতটা কেয়ারিং! বন্ধু মন্ত্রী হওয়ার সাথেসাথেই যাতে নতুন গাড়িতে উঠতে পারেন, তার আগাম ব্যবস্থা করে রেখেছেন।’ তিনি আরও লেখেন, ‘যে সরকার গণঅভ্যুত্থানের ভিত্তিতে গঠিত, সেই সরকার এখনও শহীদ-আহতের তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি, অথচ কোটি কোটি টাকা দিয়ে গাড়ি কিনছে।’
তাসনুভা সরকারের দাবিকৃত ‘ছাত্রবান্ধব’ পরিচিতিরও সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘সরকারের সব ব্যর্থতার দায় যেন কেবল ছাত্রদের, আর আন্দোলনের কৃতিত্ব ভাগ হয়ে যায় অন্যদের মধ্যে।’
এদিকে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জন্যও ১৯৫টি পাজেরোসহ মোট ২২০টি গাড়ি কেনা হবে। সব মিলিয়ে ২৮০টি গাড়ি কিনতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪৪৫ কোটি টাকা।
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘পরবর্তী সরকারের মন্ত্রীরা কী গাড়ি ব্যবহার করবেন, তার সিদ্ধান্ত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কেন নিচ্ছে? এটি তাদের দায়িত্বের বাইরে।’
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের জন্য কেনা হয়েছিল ক্যামরি ও ল্যান্সার মডেলের গাড়ি। বর্তমানে সেই গাড়িগুলোই ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে এবার নতুন সরকারের আগমন আগে থেকেই ধরে নিয়ে নতুন গাড়ির প্রস্তুতি নিয়েছে বর্তমান প্রশাসন, যা নিয়ে শুরু হয়েছে নানামুখী বিতর্ক।