গত তিন বছরে দেশে দারিদ্র্যের হার প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। বর্তমানে দেশের মোট দারিদ্র্যের হার দাঁড়িয়েছে ২৮ শতাংশ, যেখানে ২০২২ সালে এ হার ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। এছাড়া আরও ১৮ শতাংশ পরিবার রয়েছে দারিদ্র্যসীমার কাছাকাছি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে—যেকোনো সময় তারা দারিদ্র্যসীমায় পড়ে যেতে পারে।
এই তথ্য উঠে এসেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি)–এর সাম্প্রতিক এক গবেষণায়।
‘ইকনোমিক ডায়নামিকস অ্যান্ড মুড অ্যাট হাউজহোল্ড লেভেল ইন মিড ২০২৫’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি সোমবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রকাশ করা হয়। এতে প্রধান গবেষক হিসেবে বক্তব্য দেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।
গবেষণাটি দেশের ৮ হাজার ৬৭টি পরিবারের ৩৩ হাজার ২০৭ জন সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে গত ৮ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত পরিচালিত হয়।
গবেষণার মূল কিছু বিষয়:
তিনটি বড় সংকট—কোভিড-১৯, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা—দারিদ্র্য বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
আয়ের বড় অংশ খাদ্যে ব্যয়—পরিবারগুলোর মোট আয়ের ৫৫ শতাংশই চলে যাচ্ছে খাদ্য খাতে।
ঘুষ কমলেও এখনো রয়ে গেছে—গত বছর আগস্টের আগে ৮.৫৪% মানুষ সেবা পেতে ঘুষ দিলেও পরে তা কমে ৩.৬৯% হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ঘুষ দিতে হয়েছে সরকারি দপ্তরে, এরপর পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, "মানুষের জীবনযাত্রার অভিজ্ঞতা বিবেচনায় রেখে নীতি গ্রহণ জরুরি। শুধু জিডিপি নয়, বরং সমতা, ন্যায়বিচার, বৈষম্য হ্রাস ও নাগরিক কল্যাণের দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে।"
তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি ব্যাহত হয়। তাই উন্নয়ন পরিকল্পনায় মানুষের ভোগান্তির অভিজ্ঞতাও বিবেচনায় আনা উচিত।”
গবেষণা প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, সরকারের নীতি এখনও মূলত সামষ্টিক অর্থনীতিকেন্দ্রিক, যেখানে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক বাস্তবতা অনেক সময় উপেক্ষিত হচ্ছে।