আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশ সদস্যদের প্রতি রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, “কারো তেলবাজি নয়, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করাই পুলিশের মূল দায়িত্ব হওয়া উচিত।”
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে এক নির্বাচনী প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “আপনারা কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মী নন। দলীয় তেলবাজি করে যদি এখন সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেন, মনে রাখবেন নির্বাচনের পর সেই তেল শেষ হয়ে যাবে। এখন যার কাছে যতটুকু তেল আছে, রিজার্ভ করে রাখুন—তেল লাগবে পরে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করুন।”
পুলিশের কাজে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, “পেশিশক্তি দিয়ে কখনও শান্তি আনা যায় না। আপনাদের কাজ আইনের আলোকে এবং জনস্বার্থে হতে হবে। কাউকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে নিজেকে রাজনৈতিক কর্মী ভাবার সুযোগ নেই।”
সম্প্রতি রাজবাড়ী ও হাটহাজারীতে সংঘটিত সহিংসতার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, “গত কয়েক দিনের ঘটনাগুলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে কিছুটা খারাপ করেছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত আগের অবস্থানে ফিরে যেতে।”
রাজবাড়ীর ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বিষয়টি তদন্তাধীন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুরো ঘটনা সম্পর্কে জানা যাবে।”
এ ঘটনার পেছনে কোনো আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা—এমন প্রশ্নে তিনি সরাসরি মন্তব্য না করে বলেন, “তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত জানানো হবে।”
তবে ঘটনার সময় সংশ্লিষ্ট ডিসি ও এসপির দায়িত্বে থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তিনি বলেন, “তদন্ত শেষ না করে কাউকে সরিয়ে দিলে তদন্তকে গুরুত্ব না দেওয়ার মতো হবে। তদন্তে কার গাফিলতি প্রমাণিত হবে, তা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মব ঠেকাতে প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমরা ব্যর্থ হইনি। বরং সমাজে অসহিষ্ণুতা বেড়েছে। ধৈর্য না থাকলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। জনগণকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাই।”
নির্বাচনের সময় সহিংসতা বা আতঙ্ক ভোটার উপস্থিতিতে প্রভাব ফেলবে কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “যখন জনগণ নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে, তখন কেউ তাদের ঠেকাতে পারবে না। জনগণ ভোট কেন্দ্রে যাবে এবং ভোট দেবে—তাদের কেউ থামাতে পারবে না।”