বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, কে রাজনীতি করবে আর কে করবে না, সেটা আইন এবং সরকারের বিষয়। বিএনপি কখনো কোনো মব সংস্কৃতি তৈরি করে না এবং উশৃঙ্খল জনতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়। তবে গত ১৬ বছরে জাতীয় পার্টির ভূমিকা এবং অন্যান্য দলের কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে রক্ষা, জনগণের সম্পদ লুট এবং স্বেচ্ছাচারিতা প্রতিষ্ঠায় জাতীয় পার্টি মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরামের আয়োজনে তারেক রহমানের কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব বলেন। তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে এস আলম গ্রুপকে একের পর এক ব্যাংক দেওয়া হয়েছে এবং বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাচার হয়েছে। দিল্লিতে শেখ হাসিনার কাছে এস আলম ২,৫০০ কোটি টাকা পৌঁছে দিয়েছেন বলেও তিনি দাবি করেন।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে বলেছে তিনি মালয়েশিয়ায় কলকারখানা গড়েছেন, অথচ গত ১৬ বছরে তার কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম কেউ দেখাতে পারেনি।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম পাটোয়ারীর মন্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় নেই, তারা জাতীয় পার্টিকে কেন রক্ষা করবে? জাতীয় পার্টি যখন বিএনপি নেতাকর্মীদের গুম, খুন ও নির্যাতনের সময় চুপ ছিল, তখন তাদের দায়িত্ব ছিল কোথায়? ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনেও জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের হাত শক্তিশালী করেছিল। এমনকি ২০২৪ সালের আগেও তাদের ভূমিকা ছিল বিভ্রান্তিকর।
তিনি অভিযোগ করেন, জিএম কাদের ভারতের অনুমতি ছাড়া কথা বলেন না। নির্বাচনেও তাদের অংশগ্রহণ ভারতীয় নির্দেশেই হয়েছে। এতে প্রশ্ন উঠে—জাতীয় পার্টি কি ভারতের কোনো শাখা সংগঠন?
রিজভী বলেন, বিএনপি কখনো কুলিং টাইমের নামে নিপীড়নের পথ অনুসরণ করে না। শেখ হাসিনা যদি সত্যিই কুলিং টাইম দিতেন, তাহলে পরে গণগ্রেফতার, নির্যাতন, গুম-খুন হতো না। বিএনপি ক্ষমতায় না থেকেও প্রতিনিয়ত মামলার মুখোমুখি হচ্ছে, জেল-জুলুম সহ্য করছে। সুতরাং, তারা কোনো নির্যাতন বা প্রতিশোধমূলক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না।
তিনি বলেন, যারা ফ্যাসিবাদকে সহযোগিতা করেছে, তাদের বিচার দেখতে চায় জনগণ। পাশাপাশি তিনি কিছু সাংবাদিকের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করেন, যারা সাংবাদিকতার নামে এক্টিভিজম করে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছেন। জিয়াউর রহমানকে নিয়ে সংবাদপত্রের আচরণও তিনি মনে করিয়ে দেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন। আরও বক্তব্য দেন বিএফইউজের কাদের গণি চৌধুরী, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল।